বিশ্বকাপে টাইব্রেকারের ইতিহাস

নকআউট পর্বগুলোতে যখন দু‘দল ৯০ মিনিটে ম্যাচের ফলাফল বের করতে না পারে অর্থাৎ, ম্যাচ ড্র থাকে তখন ফিফার নিয়ম অনুযায়ী রেফারি আরও ৩০ মিনিট খেলা বাড়িয়ে দেন।যদি এই ৩০ মিনিট পরও ম্যাচের ফল ড্র থাকে তথন টাইব্রেকার দেওয়া হয়। ‘টাইব্রেকার’ মানে হছে টাই ব্রেক করা। ‘ড্র’ ভেঙে ম্যাচের ফলাফল নির্নয় করা।

যখন থেকে চালু হয় টাইব্রেকার
গুরুতর ফাউল ঠেকাতেই ফুটবলে পেনাল্টি কিক চালু করা হয়। ১৮৯১ সালের সেপ্টেম্বরে এক ম্যাচে ওলভহার্মটন ওয়ান্ডারার্সের জন হিথ ফুটবল ইতিহাসে প্রথম পেনাল্টি নিয়েছিলেন একরিংটন স্ট্যানলির বিপক্ষে। পরবর্তিতে এই পেনাল্টি কিককেই টাইব্রেকার হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। কোনো আন্তর্জাতিক আসরের ম্যাচে প্রথমবারের মতো টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। সেবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে চেকোস্লোভাকিয়া ৫-৩ ব্যবধানে হারায় পশ্চিম জার্মানিকে। ঐতিহাসিক প্রথম শটটা ঠিকমতোই জালে পাঠিয়েছিলেন চেকোস্লোভাকিয়ার মারিয়ান ম্যাসনি।

বিশ্বকাপে টাইব্রেকার
বিশ্বকাপের শুরু থেকে টাইব্রেকারের নিয়ম ছিলো না। ১৯৭৮ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে প্রথম চালু হয়েছিল টাইব্রেকার। সেবার অবশ্য টাইব্রেকারের প্রয়োজন হয়নি। দমবন্ধ হওয়া টাইব্রেকারে মিসের সংখ্যা খুব বেশি নেই। ১৯৮২ স্পেন বিশ্বকাপ থেকে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ পর্যন্ত টাইব্রেকারে মোট শট নেওয়া হয়েছে ২৪০টি। এর মধ্যে ১৭০টি বল জালে জড়িয়েছে।

টাইব্রেকারে কারা বেশি সফল
টাইব্রেকার সবচেয়ে বেশি সফল জার্মানি। বিশ্বকাপ টাইব্রেকারের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর জার্মানি–ফ্রান্স প্রথম টাইব্রেকারে অংশ নিয়েছিল। সেবার ১৯৮২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ফ্রান্স হেরে গিয়েছিল টাইব্রেকারে। ২০১৪ পর্যন্ত চারবার টাইব্রেকারে অংশ নিয়ে চারবারই জয় পেয়েছে জার্মানি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই চারবারের টাইব্রেকারে জার্মানির শট মিস হয়েছিল মাত্র ১টি। তা–ও সেটা ওই ১৯৮২ সালের প্রথম টাইব্রেকারে। পেনাল্টি মিস করা খেলোয়াড়টির নাম ইউলি স্টেইলাইক।

সবচেয়ে বেশি কিংবা কম যাদের
টাইব্রেকারে সবচেয়ে বেশি পাঁচবার অংশ নিয়েছে আর্জেন্টিনা। টাইব্রেকারে তারাই করেছে সবচেয়ে বেশি গোল। টাইব্রেকারে একবারই হেরেছে আর্জেন্টিনা। সেটা ২০০৬ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে। ইংল্যান্ডের টাইব্রেকার ভাগ্যটা ভালো না। টাইব্রেকার পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি হার ইংলিশদেরই। তিনবার টাইব্রেকারের মুখোমুখি হয়ে তিনবারই হার! সবচেয়ে বেশি মিসও ইংল্যান্ডের।

অপায়া অষ্টম

টাইব্রেকারে ৮ নম্বর শটটিকে কুফা বলা যেতে পারে। বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বেন লেয়টন নামক এক ফুটবল গবেষক ও লেখকের বরাত দিয়ে বলা হয়, ১০টি শটের ৮ নম্বরটি মিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। বেন লেয়টনের গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বকাপে টাইব্রেকারে নেওয়া ৮ নম্বর শটের ৫টির মধ্যে ২টিরই মিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।